অমিয়াখুম ও একটি স্বপ্ন পূরণের
গল্পঃ
তৃতীয় পর্বঃ মধুরেণ সমাপয়েত
আগের দিন ঠিক করা ছিল যে পুরা
গ্রুপ দুই ভাগ হয়ে ১৫ জন যাবে দেবতার পাহাড় পার হয়ে অমিয়াখুমের পথে, বাকি ৮ জন ধীরে
সুস্থে রেমাক্রির পথ ধরবে। কথামত ভোর সাড়ে পাঁচটায় সবাইকে ডেকে তুললাম না বলে বলি টেনে
তুললাম। তখনও অন্ধকার, এর মধ্যেই তৈরি হয়ে নিলাম সবাই।
বের হওয়ার জন্য যখন সবাই রেডি
এই মুহূর্তে আমাদের গাইড সা সুই জানাল খাবার রেডি, চাইলে আমরা খেয়ে রওনা হতে পারি।
অমিয়াখুমের পথে আর কোন খাবারের বন্দোবস্ত না থাকায় সিধান্ত নিলাম খিচুড়ি আর ডিম ভাজা
দিয়ে নাস্তা সেরে রওনা দেয়ার। কথামত পুরো গ্রুপ দাড়িয়ে দাড়িয়েই এক প্লেট করে খিচুড়ি
সাবাড় করে দিলাম। এবার যাত্রার পালা। আজ আমাদের গাইড পাড়ার যুবক অং। বেশ সহজ সরল হাসি
খুশি আর দারুণ হেল্পফুল। যখন রওনা হলাম ততক্ষণে ঘড়ির কাটা ৬.৪৫ পেরিয়েছে। পুরো পাড়া
এখনও ঘুমে আছন্ন। থেকে থেকে মোরগের ডাক আর শূকরের ঘোঁত ঘোঁত শব্দ ভেসে আসছিল।
চারদিক
ঘন কুয়াশায় ঢাকা। শীতের তিব্রতাও বেশ। কোথায় এই সময় লেপের তলে আরাম করবো, তা না, বেরিয়েছি
পাহাড় জয় করতে। প্রেমে পরলে বুঝি মানুষের এমনি হয়। আমি নাহয় পাহাড়ের প্রেমে পাগল, কিন্তু
বাকি ১৪ জনকে যে কোন ভুতে তাড়াল আজও ভেবে পাই না।
আগের দিনের মতই সারি বেধে এগিয়ে চললাম
আমারা সবাই। খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠতে হচ্ছে বলে কারো মুখেই খুব একটা রা শব্দ নেই। নিঃশব্দে
পাহাড় বেয়ে উঠে চলেছি। চারদিক ঘন কুয়াশায় মোড়া। দুরের জিনা পাড়ার বি জি বি ক্যাম্পকে
মনে হচ্ছিল কোন স্বপ্নলোকের রাজধানী। আস্তে আস্তে যতই উপরের দিকে উঠছিলাম নিচের পাড়া
ততই ঝাপসা হয়ে আসছিল। অনেকদিন পর আবার এতটা খাড়া পাহাড় বেয়ে উপরে উঠছি। শেষ প্রায় দুই
বৎসর আগে এই ধরনের খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠেছিলাম। এই দুই বৎসরে শরীর ভারি হয়েছে অনেকটা
(প্রায় ১০ কেজি) আর হাঁটুর জোর কিছুটা হলেও কমেছে। প্রতি পদে পদেই বয়সের রুক্ষ বাস্তবতা
টের পাচ্ছিলাম। কিন্তু প্রেমের কাছে যে সব শারীরিক বাধা বিপত্তি তুচ্ছ।
মাঝে মাঝে থেকেথেকে
একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলাম আর পিছিয়ে পরা সঙ্গীদের এক সাথে হওয়ার সুযোগ দিছিলাম। পাহাড়ের
প্রথম অংশ ন্যাড়া, এর পর শুরু হল কাশ ফুল আর নাম না জানা বিভিন্ন গাছের ঘন বন। কিছু
যায়গায় তো গাছপালা এতটাই ঘন যে সূর্যের মুখ দেখা যায়না।
একটা পাহাড়ের পুরোটা জুরে আবার
কাজু বাদামের ক্ষেত। এর মধ্যে চোখে পড়ল বেশ কয়েকটা ঝিরি। কোনটাতে কুল কুল করে বয়ে চলেছে
স্বচ্ছ পানি, কোনটা আবার শুকিয়ে গেছে। থেকে থেকে কিছু যায়গা শ্যাওলা ঢাকা। এই যায়গাগুলি
একটু দ্রুত পার হলাম, কারন সেই জোঁকের ভয়। গ্রুপে আমরা মোট ১৫ জন, আমি, ইমরান, শান্তনু,
আরাফ, জিয়া, মুশফিক, মুনির, মুস্তাফিয ভাই, শুভ্র, সমি, এক্রাম ভাই, শাহাদাৎ, তওহীদ
ভাই আর ভাবি। সাথে তো আমাদের গাইড অং আছেই। পথে থেমে থেমে অং সবাইকে বাঁশ কেটে লাঠি
বানিয়ে দিচ্ছিল। পাহাড়ে উঠার সময় লাঠি খুবই দরকারি একটা জিনিস। ট্রেকারদের ভাষায় এটা
থার্ড লেগ।
আস্তে আস্তে জিরিয়ে নিয়ে বেশ খানিক্তা উপরে উঠে এসিছি, এই সময় সূর্য কুয়াশা
কাটিয়ে উঁকি দিল। মিষ্টি রোদে বেশ ভালই লাগছিল। এভাবে কখন যে পাহাড়ের একেবেরে মাথায়
উঠে এসেছি টের পাইনি। গাইডের ডাকে সম্বিত ফিরল। এবার নামার পালা। অনেক শুনেছি দেবতার
পাহাড়ের কথা। এর গা বেয়ে নেমে যাওয়া নাকি খুবই দুরূহ একটা ব্যাপার। এবার এই দুরূহ ব্যাপারটারই
মুখোমুখি আমরা। আস্তে আস্তে পাহাড়ের গা বেয়ে নামতে লাগলাম। প্রথম কয়েক মিনিট বেশ ভালই
কাটল। এরপরই দেবতার পাহাড় দেখিয়ে দিল তার ভয়ংকর স্বরূপ।
গ্রুপের অধিকাংশেরই আগে পাহাড়
চড়ার অভিজ্ঞতা নেই, তায় আবার এমন খাড়া পাহাড়। কিছু যায়গা তো পুরা ১২০ ডিগ্রি খাড়া।
সামনে গাছ পালা না থাকায় সোজা নিচের খাঁদ দেখা যায়। একবার পা ফস্কালে আর রক্ষা নেই।
সোজা কয়েকশ ফুট নিচে, হাড্ডি একটাও আস্ত থাকবে কিনা সন্দেহ। কিছু যায়গায় তো কয়েকজনকে
চার হাত পা ব্যবহার করে হামাগুড়ি দিয়ে নামতে হোল। কয়েকজায়গায় পাহাড় এতটাই খাড়া যে রীতিমত
বসে বসে ছ্যেচরে নামতে হোল। জামা কাপড়ের বেহাল দশার কথা আর না হয় নাই বললাম। বার বার
মনে পড়ে যাচ্ছিল তাজিংডং পাহাড় জয়ের কথা। এই রকম বেশ কয়েকটা পাহাড় সেবার উঠতে আর নামতে
হয়েছিল।
এই ফাঁকে আমাদের গাইড অং একটা বাঁশ কেটে ফালি ফালি করে তা থেকে দড়ি বানিয়ে
নিচ্ছিল। প্রথমে বুঝতে পারিনি, পরে দেখলাম এই দড়ি দিয়েই ভেলা বানিয়েছিল। খাড়া পাহাড়
বেয়ে নামতে যেয়ে অনেকের রীতিমত ঘাম ছুটে গিয়েছিল। তবে সব কষ্ট উধাউ যখন নিচে নেমে স্বছ
পানির দেখা পেলাম। অসম্ভব সুন্দর নিলচে সবুজ পানির রং, মাঝে মাঝে মাথা উচু করে আছে
এলোমেলো বিক্ষিপ্ত বড় বড় পাথর। দুই পাশে খাড়া পাথুরে পাহাড়। এই পাথরগুলি নিশ্চয় এই
পাহাড়ের গা ভেঙ্গেই পড়েছে। কবে কোন কালে তা বোধহয় এক সৃষ্টিকর্তাই জানেন। আজও পাথর
গুলি স্বজনহার বেদনা বুকে নিয়ে ঠায় দাড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। অপার মুগ্ধতায় উপভোগ
করছিলাম প্রকৃতির এই অপার্থিব সৌন্দর্যকে।
এই ফাঁকে দেখি দলের কয়েকজন এক পাহাড়ি লোকের
কাছ থেকে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া এক হরিণের মাথা নিয়ে ফটো সেশনে মেতে উঠেছে। ফটো সেশন
শেষ না হতেই অং এর ডাক।
এবার যাত্রা ভেলা খুমের দিকে। কাছেই, বড়োজোর ২০০ মিটার দুরুত্ব।
এই যায়গাটুকু বাঁশের ভেলা করে পার হতে হবে, তাই নাম ভেলাখুম। কাছেই দেখলাম এক লোক মাছ
ধরছে। ডাকতেই ভেলা নিয়ে কাছে চলে এল। তার ব্যাগের মধ্যে বেশ কয়েকটা মাছ। সবচেয়ে বড়
মাছটি বেছে নিলাম। জিয়া ভাই বলল থুইসা পাড়ায় ফিরে এই মাছ কেটে রেঁধে খাওয়াবে। তাই ৪০০
টাকায় প্রায় দের কেজি ওজনের মাছটি সংগ্রহ করে নিলাম।
আমরা যতক্ষণে মাছ নিয়ে ব্যাস্ত,
ততখনে অং এর ভেলা বানানো শেষ। একসাথে তো সবাই পার হওয়া যাবে না। তাই তিন ভাগে ভাগ হয়ে
যাওয়ার সিধান্ত হোল। প্রথমে পার হলাম আমি আর ইমরান। ভেলা বলতে কতগুলি বাঁশ একসাথে বেধে
নেয়া আর কি। যেটাতে দুইজনের যায়গায় তিনজন উঠলেই ডুবু ডুবু অবস্থা।
ভেলায় দাঁড়ানোর উপায়
নেই, তাই বসেই পরতে হোল। বসতে না বসতেই প্যান্টের পিছন অংশ ভিজে চুপসা। ক্যামেরা বের
করার উপায় নেই, যে কোন সময় ভেলা উলটে যেতে
পাড়ে। আগেই ক্যামেরা, মোবাইল, আর মানিব্যাগ এয়ার টাইট প্যাকেটে ভরে রেখেছিলাম। তাই
ছবি তোলার উপায় নেই। হাত নিসপিস করছিল ছবি তোলার জন্য, কিন্তু সাধের ক্যামেরা বাচাতে
এ যাত্রা এই অপার্থিব সৌন্দর্য দু চোখ ভরে দেখেই তৃপ্ত হলাম। আমাদের ভেলার মাঝি আস্তে
আস্তে বাঁশ দিয়ে বেয়ে ভেলাকে এগিয়ে নিয়ে চলছিলেন ভেলাখুমের দিকে। দুই পাশে খাড়া পাহাড়
উঠে গেছে কয়েক হাজার ফিট, তার মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে এই নীলচে সবুজ পানি। হাত দিয়ে
দেখলাম প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। ভাবতেই গা শিউরে উঠছিল যদি ভেলা উলটে এই পানিতে পড়ে যাই। মাঝির
সাথে কথা বলে জানতে পারলাম এইখানে পানির গভিরতা প্রায় ৪০ ফুট। আমরা যখন ভেলা পার হচ্ছিলাম
তখন আর একটা গ্রুপ সেখানে উপস্থিত। কিন্তু তাদের বিধি বাম, ভেলা যেহেতু একটাই আর আমরা
আগে এসেছি, তাই তাদের অপেখাই করতে হোল। এখন টের পাচ্ছি ভরে রওনা দেয়ার সুবিধাটা।
হেলে
দুলে চলতে চলতে আমরা প্রায় ভেলাখুমের কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম। সফেদ জলরাশি পাথরের মাঝ
দিয়ে তীব্র বেগে বের হয়ে আসছে। নিচে প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়ে সৃষ্টি করছে ঘূর্ণনের।
ভেলা নিয়ে খুব কাছে গেলে, ভেলা উলটে যেতে পাড়ে এই ভয় থেকে পাশের একটা পাথরের গায়ে আমাদের
নামিয়ে দিল মাঝি। নেমে দেখি সামনে যাওয়ার কোন যায়গা
অবশেষে সামনে থেকে মাঝি আর ইমরানের সহায়াতায় এই যাত্রা উদ্ধার পেলাম। পাঁথরের খাজ থেকে
যখন বের হলাম ততোক্ষণে আমার জামা কাপড়ের বেশ কয়েক যায়গা ছিরে গেছে। বেশ কিছু যায়গায়
চামড়াও ছিলেছে। কিন্তু বের হয়ে যা দেখলাম, তা দেখে সব কষ্ট মুহূর্তে উধাউ। মনে হোল
যেন কোন রূপকথার রাজ্যে আসে পড়েছি। চারদিকে বিশাল বিশাল পাঁথরের রাজ্যপাট। তার মাঝখান
দিয়ে বয়ে চলছে সুভ্র সুনিল জলরাশি। যেন কোন রাজকন্যা তার সাদা বেনি দুলিয়ে দিয়েছে সবুজ
পাথুরে গালিচার বুকে। বেশ কিছুক্ষণ তন্ময় হয়ে উপভোগ করছিলাম এই সৌন্দর্য। ধ্যান ভাঙল
ইমরানের ডাকে, “আসেন ভাই সেলফি তুলি”। এই সুযোগে প্যাকেট থেকে ক্যামেরা বের করে এই
সৌন্দর্যকে ক্যামেরা বন্দি করতে ভুল করলাম না। আমরা যতক্ষণে ছবি তুলতে ব্যস্ত, ততক্ষণে
দলের বাকি সদস্যরাও হাজির। সেই পাথুরে ফাক গলে বের হতে সবারই গলদঘর্ম অবস্থা। একজনতো
পার হতে না পেরে ভেলাখুমের মুখ থেকে ফেরত গেল।
বেশ কিছুটা সময় এখানে কাটিয়ে এবার
ফেরার পালা। কিন্তু মন কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল আরও কিছুক্ষণ উপভোগ করি
এই অপার্থিবতাকে।কিন্তু বাস্তবতার কাছে আমাদের হার মান্তেই হয়। এখনো অনেকটা পথ
পারি দিতে হবে, অমিয়াখুম, সাত ভাই খুম পারি দিয়ে আবার থুইসা পাড়া হয়ে আজকেই
রেমাক্রি ফিরে যেতে হবে। অলরেডি শিডিউলের চেয়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে আছি। তাই আর
দেরি না করে এবার ফিরতি পথ ধরলাম। সেই ভয়ংকর ফাটল আবার পার হতে হোল, আবার সেই আধ
ডুবু ভেলায় চড়ে ভেলাখুম পারি দেয়া। তবে এবার একটু সাহস সঞ্ছয় করে ক্যামেরাটা বের
করে বেশ কিছু মুহূর্ত ফ্রেম বন্দী করতে পাড়লাম।
এবার গন্তব্য অমিয়াখুমের দিকে।
ভেলাখুম থেকে বড় জোর ৫০০ মিটার দুরুত্বে। রাস্তাও খুব বেশি দুর্গম না থাকায় খুব
সহজেই পৌঁছলাম।
সেই একই দৃশ। বিপুল আয়তনের পানি ঝাপিয়ে পরছে পাথরের গা বেয়ে। নাইখং
মুখ থেকে চলতে চলতে এই জলরাশি হঠাত করেই যেন ডাইভ দেয়ার ইচ্ছাটা আর চেপে রাখতে
পারেনি। বিশাল জলধারা প্রচণ্ড গর্জনে ঝাপিয়ে পড়েছে প্রায় ৪০ ফুট নিচের পাথুরে
ভূমিতে। এতও বিপুলায়াতনের পানি হটাথ করে পরায় বেশ একটা কুয়াশার ভাব সৃষ্টি হয়েছে
চারপাশে। এর ছাপ এসে পড়ছিল আমার ক্যামেরার লেন্সে আর চশমার কাচে। বেশ কিছুক্ষণ
তন্ময় হয়ে উপভোগ করছিলাম এই জল দানবকে। মনে হচ্ছিল সব কিছু ভেঙ্গে চূরে ভাসিয়ে
নিয়ে যাবে।
এই শুস্ক মৌসুমেই এই অবস্থা না জানি ভরা বর্ষায় এর কি রূপ হয়। ভাবতেই
গায়ে কাটা দিয়ে উঠল। মৌনতা ভাঙল দলের সদস্যদের ছবি তুলে দেওয়ার অনুরোধে। সবার
আবদার মেটাতে গিয়ে ঘড়িতে দেখি ১২ টা পার হয়ে যাচ্ছে। এবার পড়লাম দোটানায় সামনে
এগিয়ে সাত ভাই খুমের দিকে যাব, নাকি ফিরতি পথে থুইসা পাড়ার দিকে রওনা দিব। সাত ভাই
খুম এখান থেকে প্রায় ১ ঘণ্টার পথ, ফিরে আসতে আরও ১ ঘণ্টা, তার উপর ভেলা করে পার
হতে হবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টার ধাক্কা। যেহেতু আমাদের আজই রেমাক্রি ফিরতে হবে
তাই সিধান্ত হোল ফিরতি পথ ধরার। সাত ভাই খুম তোলা রইল ভবিষ্যতের হাতে।
এবার আবার
সেই খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠা। অসম প্রেমের পথ কখনই মসৃণ হয় না। এখেত্রেও তাই হোল। আমার
৮০ কেজি ওজনের বিশাল বপু নিয়ে দেবতার পাহাড়ের মত খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠা অসম প্রেম
ছাড়া আর কি। তবে সুখের বিষয় এই দলের অধিকাংশেরই অবস্থা আমার মতই, কারো অবস্থা আরও
খারাপ। বেশ কিছু যায়গায় বিরতি নিয়ে আস্তে আস্তে উপরে উঠতে থাকলাম। যতটা কঠিন হবে
ভেবেছিলাম এর চেয়ে বেশ আরামেই খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠে এলাম। চূড়ায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম
নিয়ে সাথে থাকা সুখাদ্য মুখে দিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে আবার সারি বেধে নামতা লাগলাম
থুইসা পাড়ার দিকে। পিছনে রেখে এলাম আমার পুরানো প্রেমকে। আবার দেখা হবে হয়ত অন্য
কোন দিকে অন্য কোন উপলক্ষে। সেই দিনের অপেক্ষায় সুখ স্মৃতি বুকে নিয়ে নেমে চললাম
এক এক করে থুইসা পাড়ার দিকে। থুইসা পাড়ায় ভেলাখুমের মাছ দিয়ে রান্না তরকারি দিয়ে
খাওয়া ভাতএর স্বাদ এখনও মুখে লেগে আছে। এরপর বেলা সাড়ে তিনটায় রওনা দিয়ে রেমাক্রি
যখন পৌঁছলাম ঘড়ির কাটা তত্তখনে সাড়ে দশটা ছুয়েছে, সে গল্প না হয় আর একদিন করবো।