মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১

 

হাতির মায়ায় পাবলাখালি রিজার্ভ ফরেস্টে

চারদিক সুনসান। একটানা ডেকে চলা ঝিঝির ডাক আর থেকে থেকে নাম না জানা পাখির কূজন, এছাড়া আর কোন শব্দের অস্তিত্ব নেই। জনমানুষ তো দূরের কথা, কোন পশু পাখির ছায়া পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। আকাশ ছোয়া গাছগুলি তাদের পত্র পল্লবে আকাশকে এমনভাবে ঢেকে রেকেছে যেন আমাদের নজর লেগে আকাশের সর্দি লেগে যাবে। সুর্যদেবও পাতার বেষ্টনী পাড়ি দিয়ে আসতে বোধহয় সাহস করছেন না। আধো আলো আর আধো অন্ধকারের এই সুনসান পরিবেশে আমরা এগিয়ে চলেছি ১২ জন পাবলাখালি বনের মধ্য দিয়ে। মনে অজানা ভয় কখন কি হয়। মাঝে মাঝে তো নিজের নিশ্বাশটাকেই বড় ভয় হচ্ছে। চারদিকে কেমন একটা গা ছম ছমে অনূভুতি। কখন জানি হাতির পালের সামনে পড়তে হয়। পাবলাখালি আসার মূল উদ্দেশ্য হাতি দেখা। হাতি মানে পালা হাতি নয়, রীতিমত তান্ডব চালানো এক পাল বুনো হাতি। সামনে পড়লে আর রক্ষা নেই। কি পরিমান তান্ডব চালাতে পারে তার কিছুটা নমুনা কিছুক্ষন আগে পরিলক্ষিত করে এসেছি নদীর ঘাটের কাছের এক বাংলোর বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে। 

 

পাবলাখালি ঘাটে নৌকা বেধে বনের পথে পথচলা

পাবলাখালি বন বিভাগের বিশ্রামাগার

হাতির তান্ডবের নমুনা



 

আমরা আপাতত এসেছি মাইনি মুখ থেকে। দুইদিন আগে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে রাংগামাটি হয়ে ট্রলারে ছুটেছিলাম কর্নফুলীর উৎসমুখের সন্ধানে। কাপ্তাই লেক পাড়ি দিয়ে হরিণা আর কাট্টলি বিল হয়ে লংদু দিয়ে সড়ক পথে গতকাল সন্ধ্যায়ই পোউছেছি মাইনিতে, যেখানে অপরূপ রূপসী মাইনি নদী মিলিত হয়েছে কাপ্তাই লেকে। মাইনী ঘাট, কাপ্তাই লেকের মাছ ব্যাবসায়ীদের হাব বলা চলে।এখান থেকে সারা দেশে কাপ্তাই লেকের মাছ পৌছে দেয়া হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভয় আর বন্যপ্রাণীর হামলার ভয় মাথায় নিয়েও রাতের ঘুমটা বেশ ভালই দিয়েছি। ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাকীবিল্লাহ ভাই আর ওসমান ভাইকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম মাইনি ঘুরে দেখতে। মেঠো পথ ধরে কখনও হালকা চড়াই আবার কখনও ছোট ছোট উৎরাই, তিনদিকে কাপ্তাই লেক আর মাইনি নদী, সব মিলিয়ে যেন কোন স্বর্গোদ্যানে এসে পৌঁছেছি। মাঝে মাঝেই চোখ কচলে দেখে নিচ্ছি স্বপ্ন দেখছি না তো। না স্বপ্ন না আমার সোনার দেশের এই অপরূপ রূপে আবার মুগ্ধ না হয়ে পাড়লাম না। ভোরের হালকা শীতে হাটতে বেশ ভালই লাগছিল আর সাথে থেমে থেমে ক্যামেরার ক্লিক তো চলছিলই। পাশের বি জি বি ক্যাম্পের জাওয়ানেরা এই ভোর বেলাতেই মর্নিং ড্রিল এ বেড়িয়েছে। সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি আর সাদা হাফ প্যান্টে সারি বেধে তাদের ড্রিল মুগ্ধতা ছড়ালো আরেকবার। মাইনি বি জি বি ক্যাম্পটা একেবারে লেকের গা ঘেঁষে তৈরি। ছোট্ট একটা টিলার উপর অপরূপ নৈসর্গিক পরিবেশ চারদিকে। হাটতে হাটতে চলে এলাম রাবেতা এ ইসলামির হাসপাতালে। আমাদের দলের কয়েকজনের রাতের থাকার ব্যাবস্থা হয়েছিল এখানে। মাইনিতে আসলে থাকার সেইরকম ভালো কোন হোটেল নেই। দুই তিনটা ছোট বোডিং এর মত রয়েছে আর বন বিভাগের বাংলো বন বিশ্রাম। হাসপাতালের পিছন দিকে রেস্ট হাউস। লাল টালির দুইতলা রেস্ট হাউসটাও অসম্ভব সুন্দর লোকেশনে অবস্থিত। তিন দিকেই কাপ্তাই লেক আর মাইনি নদী আর বিভিন্ন ধরনের গাছপালা চারদিকতাকে আরো মোহনীয় করে তুলেছে। রেস্ট হাউসের ব্যাক ইয়ার্ডে একটা শিউলি তলা ফুলে ফুলে বিছিয়ে আছে। কাঠগোলাপ তলায় বিছিয়ে থাকা সাদা কাঠ গোলাপমনে পড়িয়ে দিল সেই বিখ্যাত গান “কাঠ গোলাপের সাদার মায়ায়”। আমাদের হাঁকডাকে রমেল আর আরাফ সহ বাকিরা দ্রুতই শয্যা ছাড়ল। সবাই মিলে রেস্ট হাউসের ছাদে কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে এখানকার ম্যানাজারের সাথে এখানকার ব্যাবস্থাপনা নিয়ে হালকা আলাপ সেরে পাশের ছোট টং দোকানে চা নিয়ে বসলাম। নিজেদের বাল্যকাল ফিরিয়ে আনতেই কিনা আরাফ ব্যাস্ত হয়ে পড়লো বনরুটি কেটে তার মধ্যে কন্ডেন্সড মিল্ক ঢেলে বাটারবন বানাতে। খেতে অবশ্য খুব খারাপ লাগলো না। খাওয়া দাওয়ার পাট চুকিয়ে ইঞ্জিন নৌকায় মাইনী নদী পাড়ি দিয়ে আবার ফিরে আসলাম আমাদের আপাত বাসস্থান মাইনি মুখ রিজার্ভ ফরেস্টের বন বাংলোয়।

 

মাইনি মুখ

ফটো ক্রেডিটঃ আরাফ

রাবেতা ইসলামি বাংলোর পথ

মাইনি নদী প্যানোরমা


মাইনি নদী

মাইনি নদী

মাইনি নদী


বিজিবি ক্যাম্প

 

 

 এতক্ষনে সকালের ব্রেকফাস্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। খিচুড়ি ডিম ভাজা আর আলুর ভর্তা দিয়ে ভরপেট খেয়ে আএ কাপ চা নিয়ে লেকের পাড়ের বারান্দায় বসে সকালের রোদ উপভোগ, এর চেয়ে অপার্থিব আর কি হতে পারে। জীবনে শুখি হতে খুব বেশি কিছু কি লাগে। তন্ময় হয়ে উপভোগ করলাম কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য, কোথায় পড়ে রইলো ট্র্যাফিক জ্যামে ক্লিষ্ট নগর জীবন। এভাবে কতক্ষন কেটেছে জানিই না। রেস্ট হাউসের ম্যানেজারের ডাকে আবার বাস্তবে ফিরে এলাম, পাবলাখালি যাওয়ার ট্রলার রেডী। দেরী না করে পথে খাওয়ার জন্য কিছু রসদ নিয়ে রওনা হয়ে গেলাম।নিরপত্তার অজুহাতে তিনজন মাইনীতেই থেকে গেল। অবশ্য তাদের দোষ দিতেও পারি না। কাল রাতে রেস্ট হাউসের গানম্যান বিচ্ছিনতাবাদীদের নৃশিংশতার কথা জানালেন আর সাথে এও জানাতে ভুললেন না পাবলাখালি রিজার্ভ ফরেস্টে তাদের দলবদ্ধ অবস্থানের কথা। প্রানের মায়া সবারই থাকে। সবাই ত আর আমার মত উম্মত্ত ষাড়ের চোখে লাল কাপড় বাধতে ঘর ছাড়ে নাই। তার উপর রাতে এন এস আই থেকে ফোন আসায় অনেকেই আরো ঘাবড়ে গিয়ে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। আসলে এন এস আই থেকে আমার এক পূর্ব পরিচিত লোক ফোন করে খোজ নিয়েছিলেন আর কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছিলেন, তাতেই অনেকের সাহস উবে গিয়েছিল।

যাই হোক আমাদের যাত্রা শুরু হোল কাপ্তাই লেকের বুক চিড়ে। বর্ষা শেষের কারনে এখনও পানি নেমে যায় নি, তার উপর গত তিন দিনের টানা বর্ষনে লেকের পানি কিছুটা বেড়েছে। চারদিকে যেদিকে তাকাই শুধু পানি আর পানি, কোথাও পানির উপর কিছু গাছ মাথা তুলে আছে, কোথাওবা ঘড়ের টিনের চাল দেখা যাচ্ছে। আশেপাশে লোকালয়ের কোন চিহ্ন নেই। বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর লোকালয়ের দেখা মিললো। কয়েক ঘরপরিবার নিয়ে ছোট্ট গ্রাম। শহরের কোলাহল থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপের মত গ্রামের এক মাত্র যোগাযোগ ব্যাবস্থা নৌকা। লেকের পানিতে মাছ ধরে আর বনের কাঠ কেটেই তাদের জীবন চলে যায়। এই গ্রামের অধিকাংশ লোকই কখনও শহরের আলো দেখেনি। এখানেই জন্ম এখানেই শেষ নিশ্বাশ ত্যাগ। আরো কিছুদূর এগিয়ে দেখা মিললো ঝাকে ঝাকে বকের। অনেকদিনপর এত বড় বকের ঝাক দেখলাম, কিছুদূর গিয়ে দেখা মিলল বালি হাস, পানকৌড়ি, চখা, মাছরাঙা, ঘুঘু, শালিক সহ আরো নাম না জানা পাখির। 












পাখি দেখতে দেখতেই পৌছে গেলাম পাবলাখালি বাজারে। মনে পড়ে গেল বন বাংলোর ম্যানেজারের সতর্কবানী, বনের বেশী গভীরে যাওয়া যাবে না। পাবলাখালির কথা পরেছিলাম আজ থেকে প্রায় পঁচিশ বছর আগে পত্রিকায় এক আর্টিকেলে। পাবলাখালি রিজার্ভ ফরেস্টের রহস্যময়তার কথা, পদে পদে বিপদের হাতছানি, শ্বাপদের হিংস্র দাতের করাল গ্রাস আর মানুষরূপী কিছু শ্বাপদের মুখ ব্যাদান আর সেই সাথে পাগলা হাতির কথা, মনের গভীর কোনে একটা আচড় কেটে রেখেছিল। এতগুলো বছর গেল কিন্তু সেই আচড়ের দাগ আজো মিটেনি। আজ বুঝি দাগ মেটানোর দিন। এর আগে অনেকবারই পাবলাখালি, মাইনি, লংদু, কাসালং আসার প্ল্যান করেছি কিন্তু কিছুতেই ব্যাটে বলে মিলছিল না।

ঘাটে নামতেই নৌকার মাঝির আরেকদফা সর্তকতা, কিছুতেই বনের গভীরে যাওয়া যাবে না। আমাদের সময় বেধে দিলেন তিন ঘন্টা, এর মধ্যেই ফিরে আসতে হবে। সময়ের বাধনে কি মনকে বেধে রাখা যায়। পরের চিন্তা পরে করা যাবে। দলবেধে হাটা শুরু করলাম মেটো পথ দিয়ে। লেকের পার ধরেই আস্তে আস্তে চড়াই ভেঙ্গে চলে আসলাম  পাবলাখালি রিজার্ভ ফরেস্টের বন বাংলোয়। ছোট্ট একটা টিলার উপর লেকের পাড়ে উসম্ভব সুন্দর এই বন বাংলো। একটা ছোট পেভমেন্টের উপর এই বাংলো। কিন্তু চার দিক সুনসান আশে পাশে কোন লোক জনের ছায়াও দেখা যাচ্ছে না। কি আর করা বাংলোর সামনের ঘাসের লনে বসেই কিছুক্ষন জিড়িয়ে নিলাম, সেই সাথে গ্রুপ ফোট তোলার পালাও চুকালাম। বেশ কিছুক্ষন পর দেখি সাত আট বছরের এক বালক আরেক কিশোরের হাত ধরে মাটির রাস্তা দিয়ে এগিয়ে আসছে। কাছে ডাকলাম। জিজ্ঞেস করে জানা গেল, এই রাস্তা ধরে কিছুদুর এগিয়ে গেলেই একটা ছোট বাঙ্গালী পাড়া আছে, তার সেই গ্রামের বাসিন্দা। আর গ্রামের পাশ দিয়েই বনে ঢোকার রাস্তা চলে গেছে। আমরা আর দেরী না করে দুই বালককে গাইড সাবস্ত্য করে অজানার পথে পা বাড়ালাম।











মাটির রাস্তা ধরে কিছুটা চড়াই পার হতেই দেখা মিললো বনের পথের।লোকালয় ছেরে পা বাড়ালাম বনের রাস্তা ধরে। চারদিকে নাম না জানা গাছের সারি। দলের এক বিজ্ঞ লোক মোবাইলের আপ বের করে ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন গাছের নাম আর চৌদ্দগুষ্টী উদ্ধারে। হায়রে প্রযুক্তি, ইট কাঠ পাথরের ক্লেদাক্ত পৃথিবী ছেড়ে লোকালয়ের মায়া মাড়িয়ে প্রযুক্তিকে ঝেরে ফেলে দু দন্ড শান্তিতে থাকতে এসেছিলাম এখানে, কিন্তু প্রযুক্তি এখানেও পিছু ছাড়ছে না। যাই হোক প্রযুক্তিবিদের প্রযুক্তি গাছের ডালে বাড়ি খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়লো, কারন নেটওয়ার্ক ছাড়া এইখানে প্রযুক্তি অচল।

এবার শান্তিতে বনের পথ পাড়ি দিতে থাকলাম। চারদিক কেমন একটা গা ছম ছমে অনুভূতি। কেমন একটা ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভূতি আর চারদিকে মাতাল করা কেমন একটা বুনো গন্ধ। সামনে এগিয়েই পাশে পেলাম কাপ্তাই লেকের একটা ক্ষুদ্র নালার মত অংশ যেটা অনেক্ষন আমাদের সং গ দিল। আকাশ ছোয়া গাছগুলির অধুকাংশয়েরই নাম জানি না, তবে একেকটা একেকরকম। সৌন্দর্‍্যে কে কাকে ছাপিয়ে যাবে সেই প্রতিযোগিতা যেন চলছে। আর আমার অবস্থা যেন সৌন্দর্যগ্রস্ত বানপ্রস্থ সেই পথিকের ন্যায় যে সব হারিয়ে পথকেই বানিয়েছে তার ঠিকানা। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মত সম্ভব না হলেও আপাতত পথকেই ঠিকানা বানিয়ে বনের পথ ধরে এগিয়ে চললাম।মনের মধ্যে অজানা ভয় কখন কি হয়। দলের কয়েকজন তো মতামত দিয়েই ফেললো আর বোধহয় সামনে আগোনো ঠিক হবে না। আশে পাশে কোন জন মানুষের দেখা নাই। বিপদে পড়লে চিৎকার করলেও কেউ শুনবে না। দুর্বিত্তের ভয় তো আছে, সেই সাথে কখন হাতির পালের সামনে পড়ি তার ঠিকানা নেই। পাবলাখালি নেমেই হাতির উন্নমতার যে নমুনা দেখে এসেছি তার রেশ মনে অয়ে গেছে এখনো। তাই আমার মনেও কু ডাক ডেকে উঠলো। যতই প্রকৃতি প্রেমিক হই,নিজের জানের ভয় সবারই আছে। এর মধ্যে আমাদের দুই পথ প্রদর্শক ঘোষণা দিয়ে বসলো এর আগে তারা আর কিছুতেই যাবে না। সামনে নাকি বিপদ হতে পারে।কি আর করা বাস্তবতার কাছে প্রেমকে জলাঞ্জলি দিয়ে ফিরতি পথ ধরলাম।    








স্মৃতির শহর পর্ব ১ঃ খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ


 #স্মৃতিরশহর



স্মৃতির শহর। পর্ব ১

নামঃ খান মহম্মদ মৃর্ধার মসজিদ 

প্রকারঃ ঐতিহাসিক স্থাপনা/উপসানালয়/দর্শনীয় স্থান

লোকেশনঃ আতশখানা লেন, লালবাগ, ঢাকা (লালবাগ কেল্লা থেকে  দক্ষিন দিকে ৫ মিনিটের হাটা দূরত্বে। 

স্থাপিতঃ ১৭০৬

স্থপতিঃ জানা যায় নাই

ইতিহাসঃ

 খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের পুরানো ঢাকা এলাকার আতশখানায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। এটি ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার নায়েবে নাযিম ফররুখশিয়ারের শাসনামলে নির্মিত হয়। ঢাকার প্রধান কাজী ইবাদুল্লাহের আদেশে খান মহম্মদ মৃর্ধা এটি নির্মাণ করেন। ১৭০৪-০৫ সালে তিনি নির্মাণের আদেশ দিয়েছিলেন। মসজিদটিতে সুন্নি বা হানাফি সম্প্রদায়ের মুসলিমরা নিয়মিত পাচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন।

 

বিশেষত্বঃ 

লালবাগ দুর্গের পশ্চিমে পুরনো ঢাকায় আতিশখানায় দাঁড়িয়ে আছে সুন্দর এ মসজিদটি। এই তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির ভিত্তি প্রায় সতের ফুট উঁচু একটি প্ল্যাটফর্মের ওপর। প্ল্যাটফর্মের নীচে টানা করিডোর,পাশে ছোট ছোট প্রকোষ্ঠ. এখানে আলো  বাতাশের খেলা মনোমুগ্ধকর। মসজিদ আর মাদ্রাসা ছাড়া বাকি অংশ একদমই উন্মুক্ত,ধারণা করা হয় এখানেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হতো,আর নীচের ঘর গুলো ছিল থাকার  জায়গা। মসজিদের নিচে চাতালের মত যায়গায় ফুলের বাগান আছে। গেট দিয়ে ঢুকে পাথুরে বাধানো সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে মূল মসজিদে প্রবেশ করতে হয়। এই ধরনের নান্দনিক স্থাপনা ঢাকার মসজিদের মধ্যে বিরল। একই ধরনের কাছাকাছি স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য সম্বলিত আর একটি মসজিদ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের দক্ষিন-পশ্চিম পার্শ্বে মো মুসার মসজিদ এবং বাবু বাজার বাদামতলি ঘাট সংলগ্ন দারোগা আমীর আলীর মসজিদ। প্রথমোক্তটি এখনও নামাজের জন্য ব্যাবহৃত হলেও দ্বিতীয়টি প্রায় পরিত্যক্তই বলা চলে।




কাছাকাছি উল্লেখযোগ্য স্থাপনাঃ

১। লালবাগকেল্লা 

২। ফররুখ শিয়ারের মসজিদ

৩। লালবাগ শাহী মসজিদ

৪। ঘোড়া শাহ এর মাজার

৫। ঢাকেশ্বরী মন্দির।